ঈদের ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদের দ্বিতীয় দিন লাখো পর্যটক সৈকতে নেচে-গেয়ে ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছেন। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের পর্যটকের ভিড় এখন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ঈদের ৭ দিনের ছুটিতে ১০ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটবে কক্সবাজারে। ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউসের ৯০ শতাংশ রুম অগ্রিম বুকিং হয়েছে।
বুধবার (৪ মে) বেলা ১১টার দিকে সমুদ্রসৈকতের কলাতলী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, সীগাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্ট ও কবিতা চত্বর পয়েন্টে হাজার হাজার পর্যটক দেখা যায়।
দর্শনার্থী ও পর্যটকরা সমুদ্রস্নান, ঢেউয়ের সঙ্গে টায়ার নিয়ে দোল খাওয়া, নীল জলে সাঁতার, ওয়াটার বাইক রাইডিংসহ প্রিয়জনের সঙ্গে সেলফি তুলে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছেন।
গাজীপুর থেকে সপরিবারে কক্সবাজার আসা তৌফিক মোল্লা বলেন, ‘এবারের ঈদের ছুটিতে বেড়ানোর জন্য কক্সবাজারকে বেছে নিয়েছি। ঈদের দিন রাতেই বাস ধরে সকালে এসে কক্সবাজার পৌঁছাই আমরা। হোটেল আগে থেকে বুকিং করা ছিল। ৩ দিন থাকবো। আনন্দ করবো পরিবারের সঙ্গে।’
কুড়িগ্রাম থেকে আসা তাইফুল কবির বলেন, ‘এক বছর আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ২০২২ সালের ঈদে কক্সবাজার এসে সময় কাটাবো। তাই স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে চলে এলাম। বরাবরের মতো এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। ঈদের আনন্দ সাদা বালু ও নীল জলে উপভোগ করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।’
হবিগঞ্জ থেকে আসা নতুন দম্পতির প্রথম ঈদ উদযাপন কক্সবাজারে। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে তারা চলে এলেন পর্যটন নগরীতে। কথা হয় তাদের সঙ্গে। শরীফুল-ইয়াসমিন দম্পতি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে কক্সবাজার আসার আগ্রহ ছিল। অবশেষে এই ঈদে কক্সবাজার আসলাম। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করলাম এবং ভাজি-ভর্তা দিয়ে ভালো করে খেতে পারলাম। এখানে ঈদের সময়টা ভালোভাবে কাটছে।’
সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৭টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে পর্যটকের নিরাপত্তা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, ঈদের প্রথম দিন থেকে সৈকতে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। সেইসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারাও সমুদ্র দেখতে এসেছেন। ঈদের দ্বিতীয় দিনে সৈকতে ২ লাখ পর্যটক নেমেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। এদিন সকাল থেকে পর্যটকরা সৈকতে নামতে শুরু করে। পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় আন্তরিক। সৈকতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
পর্যটকদের কাছ থেকে যেন রুম ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় না করতে পারে সেজন্য হোটেল মালিকদের ভাড়ার তালিকা টানানোর নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পৃথক ৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত তৎপর থাকবে বলেও জানান তিনি।