খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শাস্তি প্রত্যাহার ও প্রশাসনের দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক প্রতিবাদী সমাবেশ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলকের সামনে ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক’ ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়।
সমাবেশে আগামী সাত ফেব্রুয়ারীর মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, খুবির সিন্ডিকেটকে ‘অবৈধ’ বলে দ্রুত বাতিলের দাবি ও খুবির উপাচার্যকে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের আগপর্যন্ত কোনো প্রকার ছাড়পত্র না দেওয়ার আহ্বানও জানান বক্তারা।
দেশে দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে হলে দেশব্যাপী আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ জামাল কাদেরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় যদি সন্ত্রাস-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়। তাহলে খুবির ঘটনাটি খুবই স্বাভাবিক। পুকুরের পানি পচে গেলে যেমন চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, তেমনি আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একই অবস্থা। আমরা যুদ্ধ করেছিলাম শুধু একটা স্বাধীন দেশের জন্য নয় বরং জনগণের জন্য সম্যক মানবিক অর্জন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। সেখান থেকে বাংলাদেশ আজ অনেক দূরে। এখন যদি দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চাই, তাহলে এই আন্দোলনকে এখানে সীমাবদ্ধ না রেখে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ বলেন, অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস এক না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে জাতিগত উত্থানের পরেই তারা বিশ্ববিদ্যালয় করেছে কিন্তু আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েই জাতি গড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সেই জায়গা, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ মেধার জোরে এসে পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। আর এই স্বপ্নকে বিনষ্ট করার সর্বশেষ উদাহরণ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। একজন ক্ষমতান্ধ ও ক্ষমতার বিকারগ্রস্ত উপাচার্য যিনি নিখাদ ব্যক্তিগত রাগ, বিদ্বেষ এবং প্রতিহিংসার জেরে তিনজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছেন। খুবির এমন ন্যাক্কারজনক কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনকের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন, সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার প্রমুখ। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।