বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসের জন্য রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। রফতানিকারকদের কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য ৭ বিলিয়ন ডলারের এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
বুধবার স্পিকার ড. শিরীর শারমনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের বুধবারের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত সরকারি দলের মোরশেদ আলম (নোয়াখালী-২) ও মাহফজুর রহমান (চট্টগ্রাম-৩) এর লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
মাহফুজুর রহমান (চট্টগ্রাম-৩) এর লিখিত প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংসদে জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটি প্রত্যক্ষ প্রভাব পৃথিবীর সকল উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়েছে। চলতি অর্থবছর শেষে বিভিন্ন দেশের সংঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হবে। তবে আপাতত যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে ভারত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও রফতানি আয় বৃদ্ধির বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে পণ্য রফতানি আয় ১০.৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি জানান, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম, তেল বীজসহ যেসব পণ্য আমদানি করা হতো, তা ভারত, কানাডা ও অন্যান্য উৎস হতে আমদানি করা হচ্ছে বিধায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য শিল্পের কাঁচামাল যা ইউরোপ হতে আমদানি করা হতো, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি ও অন্যান্য ঝুঁকির কারণে তা চীন থেকে আমদানি করা হচ্ছে বিধায় চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ সার্বিক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এবং বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলায় সরকার বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ), মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ), সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, এ লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ভারত, সিঙ্গাপুর, জাপান, কানাডা, চীনসহ ৯টি দেশ ও আসিয়ান, মার্কোসর ও ইউরেশিয়া অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। রফতানিকারকদের কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য ৭ বিলিয়ন ডলারের এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে একটি সমন্বিত অর্তনৈতিক অংশিদারিত্ব চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইনেন্দানেশিয়া, নেপাল, শ্রীলংকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পিটিএ চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।